দাঁত দিয়ে নখ কাটা অনেকের কাছে একটি অভ্যাস, যা অজান্তেই দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই অভ্যাস শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্...
দাঁত দিয়ে নখ কাটা অনেকের কাছে একটি অভ্যাস, যা অজান্তেই দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই অভ্যাস শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক—সব বয়সের মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। দাঁত দিয়ে নখ কাটাকে সাধারণত একধরনের মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার বহিঃপ্রকাশ মনে করা হয়। তবে এই অভ্যাসের শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকেই ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে।
দাঁত দিয়ে নখ কাটার ক্ষতিকর দিক :
দাঁতের ক্ষতি
নখ কাটা দাঁতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যা দাঁতের ইমেল নষ্ট করতে পারে। নিয়মিত এই অভ্যাসের ফলে দাঁতের গঠন পরিবর্তন হতে পারে এবং দাঁতের প্রান্তে চিড় ধরতে পারে। তাছাড়া, দাঁতের মাড়িতে সংক্রমণ বা প্রদাহের ঝুঁকিও বাড়ে।
হজমজনিত সমস্যা
নখের নিচে জমে থাকা ময়লা ও জীবাণু দাঁত দিয়ে কাটার সময় মুখে প্রবেশ করে। এসব জীবাণু পরবর্তীতে পেটের ভেতরে গিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এতে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
সংক্রমণের ঝুঁকি
নখের নিচে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ফাঙ্গাস বাস করে। দাঁত দিয়ে নখ কাটার সময় এই জীবাণু সহজেই মুখে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে ঠান্ডা লাগা, ফ্লু বা অন্যান্য সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
হাতের ত্বকের ক্ষতি
দাঁত দিয়ে নখ কাটার ফলে হাতের ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। নখ কাটতে গিয়ে আশেপাশের ত্বক কেটে গেলে সেখানে সংক্রমণ বা ফোলাভাব দেখা দেয়। এছাড়া, বারবার নখ কাটার ফলে নখের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট হয়ে যায়।
মানসিক চাপের বৃদ্ধি
দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস মানসিক দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগের লক্ষণ হতে পারে। এটি এমন একটি চক্র তৈরি করে, যা দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দেয়। এ অভ্যাস ছাড়তে না পারলে মানসিক অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
প্রতিকার
১. নখ পরিষ্কার রাখা: নখ ছোট এবং পরিষ্কার রাখা জরুরি, যাতে এটি কাটার প্রলোভন না হয়।
২. গ্লাভস ব্যবহার: হাতের নখ কাটার অভ্যাস কমানোর জন্য গ্লাভস পরা যেতে পারে।
৩. বিকল্প অভ্যাস তৈরি করা: নখ কাটার বদলে বল চাপা বা ফিজেট স্পিনারের মতো কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. পরামর্শ গ্রহণ: অভ্যাস ছাড়তে না পারলে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া উচিত।
দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এর ক্ষতিকর দিকগুলো মোটেও হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। সময়মতো সচেতন হলে এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।


COMMENTS