মশার কামড়ে হতে পারে যেসব রোগ মশা শুধু বিরক্তিকর নয়, এটি বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের কারণও হতে পারে। সারা বিশ্বে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ মশাবাহ...
মশার কামড়ে হতে পারে যেসব রোগ
মশা শুধু বিরক্তিকর নয়, এটি বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের কারণও হতে পারে। সারা বিশ্বে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। মশার কামড়ে সংক্রমিত হওয়া রোগগুলো সাধারণত ভাইরাস, পরজীবী বা ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। নিচে মশার কামড়ে হতে পারে এমন কিছু সাধারণ রোগের তালিকা দেওয়া হলো।
১. ডেঙ্গু জ্বর
ডেঙ্গু ভাইরাস এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। উচ্চ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, পেশি ও গিঁটের ব্যথা, এবং ত্বকের র্যাশ ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ। জটিল ক্ষেত্রে এটি ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার হিসেবে মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
২. ম্যালেরিয়া
ম্যালেরিয়া প্লাজমোডিয়াম নামক পরজীবী দ্বারা সংক্রমিত হয় এবং এটি এনোফিলিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। লক্ষণগুলো হলো জ্বর, ঠান্ডা লাগা, ঘাম হওয়া, এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়া। এটি সময়মতো চিকিৎসা না করলে প্রাণঘাতী হতে পারে।
৩. চিকুনগুনিয়া
এডিস মশা দ্বারা ছড়ানো চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো জ্বর ও জয়েন্টে তীব্র ব্যথা। কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী জয়েন্টের সমস্যা দেখা দেয়।
৪. জিকা ভাইরাস
জিকা ভাইরাস এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। প্রাথমিক লক্ষণগুলো হালকা জ্বর, ত্বকের র্যাশ এবং চোখ লাল হওয়া। তবে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক, কারণ এটি গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৫. ফাইলেরিয়াসিস
ফাইলেরিয়াসিস বা হাতির পা রোগ কিউলেক্স মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এটি পরজীবী কৃমির মাধ্যমে হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণে আক্রান্ত অঙ্গগুলো ফুলে যায়।
৬. জাপানিজ এনসেফালাইটিস
জাপানিজ এনসেফালাইটিস ভাইরাস সাধারণত কিউলেক্স মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এটি মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
৭. পশ্চিম নাইল জ্বর
পশ্চিম নাইল ভাইরাস কিউলেক্স মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এটি সাধারণত হালকা জ্বর সৃষ্টি করে, তবে কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্রে আক্রমণ করে মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
- মশার কামড় থেকে বাঁচতে নিচের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি:
- মশারি ব্যবহার করুন।
- বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন এবং পানি জমতে দেবেন না।
- শরীর ঢাকা পোশাক পরুন।
- মশারোধী স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করুন।
মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সবার জন্য অত্যন্ত জরুরি। নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য এই বিষয়ে যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।


COMMENTS